﴾১﴿ তাওয়াফে জিয়ারতকে তাওয়াফে ইফাজা বলে। এটা হজ্বের আরেকটি রুকন। এর সময় ১০ই জুলহিজ্জার দিন সুবহে সাদিক থেকে শুরু হয়। এর পূর্বে (তা আদায়) হতে পারেনা। এতে ৪ চক্কর ফরজ এটা (৪ চক্কর) ছাড়া তাওয়াফ হবেই না এবং হজ্ব হবে না, আর ৭ চক্কর পূর্ণ করা ওয়াজিব।
﴾২﴿ তাওয়াফে জিয়ারত জিলহজ্জ মাসের দশ তারিখ করা উত্তম। সুতরাং প্রথমে জামরাতুল আকাবার রমী অতঃপর কোরবানী এবং এরপর হলক অথবা তাকছীর হতে অবসর হয়ে যাবেন। এখন উত্তম হল যে, কোরবানীর কিছু মাংস খেয়ে পায়ে হেঁটে মক্কা মুকাররমায় উপস্থিত হোন। আর ইহাও উত্তম যে, বাবুস সালাম দিয়ে মসজিদে হারাম শরীফে প্রবেশ করবেন।
﴾৩﴿ (এর) উত্তম সময় তো ১০ তারিখ কিন্তু তিন দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাওয়াফে জিয়ারত করতে পারবেন। কেননা ১০ তারিখ খুব বেশী পরিমাণে ভীড় হয়ে থাকে। তাই নিজের জন্য যেভাবে যখন সহজ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখাই খুব উপকারী। এভাবে اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلّ অনেক কষ্টদায়ক বস্তু এবং অনেক সময় অন্যদেরকে কষ্ট দেয়া, মহিলাদের সাথে (ভীড়ে) মিশে একাকার হয়ে যাওয়া, তাদের সাথে শরীর ঘর্ষণ হওয়া এবং নফস ও শয়তানের ধোঁকায় পড়ে যাওয়া অনেক গুনাহ থেকে বেঁচে থাকবেন।
﴾৪﴿ অজু সহকারে এবং সতর ঢাকা অবস্থায় তাওয়াফ করুন। (অধিকাংশ ইসলামী বোনদের হাতের কব্জি (কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত) তাওয়াফের সময় খোলা থাকে। যদি তাওয়াফে জিয়ারতের চার চক্কর অথবা তার চেয়ে বেশী এরকম করে আদায় করে যে, হাতের কব্জির ৪ অংশের ১ অংশ অথবা মাথার ৪ অংশের ১ অংশের চুল খোলা ছিল তাহলে দম ওয়াজিব হয়ে যাবে। হ্যাঁ! যদি সতর ঢাকা অবস্থায় এ তাওয়াফ পুনরায় আদায় করে দেয় তাহলে ‘দম’ রহিত হয়ে যাবে।)
﴾৫﴿ যদি কিরানকারী এবং হজ্বে ইফরাদ আদায়কারী তাওয়াফে কুদুমের মধ্যে আর তামাত্তুকারী হজ্বের ইহরাম বাঁধার পরে কোন নফল তাওয়াফের মধ্যে হজ্বের ‘রমল এবং সাঈ’থেকে অবসর হয়ে থাকে (অর্থাৎ তা এর মধ্যে আদায় করে থাকেন) তাহলে এখন তাওয়াফে জিয়ারতের মধ্যে উহার (আদায় করার আর) প্রয়োজন হবে না।
﴾৬﴿ যদি রমল এবং সাঈ পূর্বে না করে থাকে, তাহলে এখন নিত্যদিনের পোষাকেই তা আদায় করে নিন। হ্যাঁ! তার এতে ইজতিবা করা সম্ভব হবে না। কেননা এখন আর এর সময় নেই।
﴾৭﴿ যে ব্যক্তি (এই তাওয়াফ) ১১ তারিখ না করে থাকেন, তাহলে ১২ তারিখে করে নিন। এই সময়ের পর বিনা কারণে দেরী করা গুনাহ। জরিমানা হিসেবে একটি কোরবানী করতে হবে। হ্যাঁ! যেমন: মহিলার হায়েজ অথবা নেফাস শুরু হয়ে গেল তাহলে সে তা শেষ হওয়ার পরে তাওয়াফ করবে। কিন্তু হায়েজ অথবা নেফাস থেকে যদি এমন সময়ে পাক হয় যে, গোসল করে ১২ তারিখে সূর্য ডুবার পূর্বে ৪টি চক্কর করে নিতে পারবে তাহলে তা করে নেয়া ওয়াজিব। না করলে গুনাহগার হবে। এমনই ভাবে যদি এতটুকু সময় সে পেয়েছিল, যে তাওয়াফ করে নিতে পারত কিন্তু সে করল না, আর এ মুহুর্তে তার হায়েজ অথবা নেফাস চলে আসল তাহলে সে গুনাহগার হল। (প্রাগুক্ত, ১১৪৫ পৃষ্ঠা)
﴾৮﴿ যদি তাওয়াফে জিয়ারত না করে থাকে তাহলে মহিলারা (ইহরাম হতে) হালাল হবে না। যদিওবা কয়েক বৎসর অতিবাহিত হয়ে যায়। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ২৩২ পৃষ্ঠা)
﴾৯﴿ তাওয়াফ হতে অবসর হয়ে দুই রাকাত ‘ওয়াজিবুত তাওয়াফের’ নামায নিয়মানুযায়ী আদায় করবেন। এরপর মুলতাজিমেও হাজেরী দিবেন এবং জমজমের পানিও পেট ভরে পান করবেন।
﴾১০﴿ اَلْحَمْدُ لِلّٰہ عَزَّوَجَلَّ! আপনাকে মোবারকবাদ যে, আপনার হজ্ব পরিপূর্ণ হয়ে গেছে এবং মহিলারাও (স্ত্রীগণও) হালাল হয়ে গেছে।
صَلُّوْا عَلَی الۡحَبِیۡب! صَلَّى اللہُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد

0 Comments